![]() |
বাদশাহ্ সৈকত |
আবারো পাগলীকে নিয়ে লিখতে বাধ্য হলাম। কেন না বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সত্যিই আমাকে কিছুটা হলেও মর্মাহত করে তুলেছে। এর আগেও "পাগলীর সন্তান প্রসব" শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম। আবারো একই ঘটনা। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এক পাগলীর ছেলে সন্তান প্রসব। কিন্তু সেই সন্তানের জনকদের আমরা খুঁজে বের করতে পারি না।
আমাদের এতো পুলিশ, গোয়েন্দা, ডিবি, এসবি থাকতে পাগলীদের সাথে যৌন সঙ্গমকারীদের খুঁজে পাই না। নাকি অভিযোগ কারী না থাকলে এই জেনাকারী পুরুষদের খোঁজার কোন নিয়ম নাই। নাকি পাগলীদের ধর্ষনের বিষয়ে এদেশের সংবিধানে কোন আইন নাই এজন্যই তাদের খোঁজা হয় না। নাকি সেখানে কোন লাভ-লসের হিসাব নাই এজন্য সে বিষয়ে প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নাই।
ঘটনার বিবরন দেয়ার আগে পাগল বা পাগলী বিষয়ে আমার উপলদ্ধির কথা বলতে চাই। সেটা এরকম যে সৃষ্টি কর্তা এই মানব জাতির মধ্যে কিছু মানুষকে পাগল বানিয়েছেন। যাতে করে যারা পাগল হননি তারা এই পাগলদের দেখে ভাবতে পারেন যে সৃষ্টি কর্তা যে কোন মুহুর্তে তাদেরকেও পাগল বা পাগলী বানাতে পারেন। এই উপলদ্ধি থেকেই তারা যেন সৃষ্টি কর্তাকে ভয় করেন।
আর একটা উপলদ্ধি কথা না বললে নয়। আমার উপলদ্ধিতে পাগল হলো একটা সম্পুর্ণ স্বাধীন চেতনার নাম। পাগলদের কোন ঘর-বাড়ি থাকে না। তাদেরকে কোন ঘর-বাড়িতে আপনজনেরাও আটকিয়ে রাখতে পারে না। তারা দেশের আইন মানে না, রাজনীতি করে না। কাজ করে না, ব্যবসা-বানিজ্যও করে না। ভালো পোশাক পড়ে না, ভালো খাবারও খায় না। এক কথায় পৃথিবীতে তাদের কোন দায় বদ্ধতা নেই।
কিন্তু হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়া এই পাগলী কোন দায় বদ্ধতা থেকে সন্তান জন্ম দিলো। নাকি আমাদের মতোই সুস্থ দিনের বেলায় ভদ্র কোন পুরুষ তাকে দায় বদ্ধতায় ফেলে দিয়েছে।
পাগলীর সন্তান জন্ম দেয়ার এ ঘটনায় প্রাগৈতিহাসিক গল্পটার কথা মনে পড়ে গেল। এক সময়ের ডাকাত শেষ বয়সে এসে ভিক্ষা বৃত্তি করে খেলেও তার কিন্তু যৌবনের ক্ষধা শেষ হয়ে যায়নি। সে সময় সুযোগ বুঝে এক ভিখারিনীকে কাঁধে তুলে জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং যৌন ক্ষুধা মিটায়। বাঁধা দেয় না ভিখারিনীও। কেন না তারও তো একই ক্ষুধা আছে। এমন ঘটনা সন্তান জন্ম দেয়া এ পাগলীর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। কিন্তু সেটারও তো তদন্ত হওয়া উচিৎ নয় কি?
আর যদি কোন পাগল পাগলীর সাথে প্রাগৈতিহাসিকের মতো ঘটনা না ঘটিয়ে থাকে তাহলে এর দায়ভার কে নিবে।
গুটি কয়েকজন যুবক বা ব্যাক্তি পাগলীর প্রেগনেন্ট হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে অতি উৎসাহী হয়ে তাকে জোড় করে রাস্তা থেকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং ফ্রীতে মেডিকেল চেকআপ করিয়ে প্রেগনোন্সির বিষয়টি নিশ্চিত হয়। কিন্তু এই পাগলী তারপর থেকে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তাকে পাহাড়া দেয়ার দায়িত্ব কেউ নেয়নি। কেন না এই সময়ের মধ্যে পাগলী বহুবার হাসপাতাল ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়েছ আবার ফিরে এসেছে অবস্থায় গর্ভবতী পাগগলীর দাযভার নিতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। এ রকম একটা অবস্থার এক সময হাসপাতালেই পাগলীর প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং পাগলী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।
বিষয়টি জানার পর অনেকেই উৎসাহী হয়ে ওঠে এবং হাসপাতালে পাগলীর সন্তান ও পাগলীকে দেখতে যাচ্ছেন। এমন কি পাগলী ও তার সন্তানকে জামা কাপড়ও কিনে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকও জামা-কাপড় পাঠিয়েছেন।
এখন আমার যেটা চাওয়া সেটা হলো যারা পাগলীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন এবং প্রশাসনের যারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন তাদের উচিৎ পাগলীর সন্তানের বাবা যেই হোক তাদেরকে খুঁজে বের করা এবং মুখশ উন্মোচিত করা। তানাহলে মানুষের চরিত্র নিমজ্জিত হতে হতে তলানীতে গিয়ে ঠেকবে।
পুনশ্চঃ ছবি এবং লেখা লেখকের fb প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত।
ধন্যবাদ আনু ইসলাম
ReplyDeleteআন্তরিক অভিনন্দন আপনাকে।
Delete