লেখকঃ খাইরুল আনামদু'জায়গায় চাকুরীরত, ইদানিং বিবাহিত, দুই পেশার মানুষের মধ্যে ফোনে কথপোকথনঃ
শিকাগো, আমিরিকা থেকে
ইঞ্জিঃ হ্যালো, ঢাকা? এটা কি ঢাকা? হ্যালো, এটাকি ......
ডাঃ কি হলো? ফোন বেজে ওঠা থেকেই তো আমি হ্যালো, হ্যালো বলে যাচ্ছি। তবু অত চ্যাঁচাচ্ছো কেন?
ইঞ্জিঃ স্যরি। আসলে তুমি না অন্য কেউ ভেবে একটা কনফিউশান হচ্ছিল।
ডাঃ কে মনে হচ্ছিল? আমার আম্মা না আমাদের কাজের বুয়া? গলার স্বর শুনে নিজের বউ চিনলে না? আশ্চর্য্য!
ইঃ আবারও স্যরি। তা কেমন আছ বল, মানে ইয়ে, তোমার এ অবস্থায়। মানে ডাক্তার সাহেব কি বলল?
ডাঃ কি আর বলবে? এখন এডিমা (edema) হয়ে ধুমসি হয়ে যাচ্ছি। একবার নিজে চোখে দেখলে মনে হয় লাথি মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেবে। ডাক্তার বলেছে, পরে এক্লামশিয়াও (eclampsia) ও হতে পারে। তখন বুঝবে। বাছার বৌ পাগল হওয়ার এত শখ বেরিয়ে যাবে।
ইঞ্জিঃ কি সব বলছ? ওগুলোর মানে কি? বাবার জন্মেও তো ওই সব ওয়ার্ডের নাম শুনিনি। খুব খারাপ কিছু?
ডাঃ বল কি? এ সবের নাম শোন নি? এগুলো তো সবাই জানে। তা তোমার আর দোষ কি? গলা শুনে নিজের বউকেই তো চিনতে পারলে না। তা যাকগে, আজ এত দেরীতে ফোন দিলে যে? কি হয়েছিল?
ইঞ্জিঃ আর বোলনা। দরকারী কিছু কিনতে সকালে উঠেই চা না খেয়ে দৌড়তে দৌড়তে একটু বাজারে গিয়েছিলাম। দু’তিন জায়গায় ঘুরলাম। কিচ্ছু লাভ হলো না বোয়েচো। মন খারাপ। খালি ব্যাগ নিয়ে বাড়ী ফিরে এসেই তোমাকে ফোন দিলাম। তাই একটু দেরী হয়ে গেল। সামান্য দেরীর জন্য তুমি আবার কিছু মনে ক’রো না।
ডাঃ আহারে, বেচারা! অত সকাল সকাল বাজারে গিয়েও কোন সুবিধে হলো না? খুব দরকারী কিছু? কি জিনিষটা?
ইঞ্জিঃ না, মানে তেমন কিছু না। ঐ আর কি, সামান্য কয়েকটা এনট্রপি (Entropy) কিনতে গিয়েছিলাম। দেখলাম একগাদা লোক দোকানটায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। ভীড়টা কমতে এগিয়ে গিয়ে দেখি, সব ফর্সা। তো পরের লেনে আইসোথার্ম (Isotherm) এর একটা দোকান ছিল। ভাবলাম এনট্রপি না পাই, অন্তত কেজি দুই আইসোথার্ম না হয় নিয়ে যাই। ও খোদা। সেখানেও সেই একই অবস্থা। আরো দু’সপ্তাহ নাকি দেরী করতে হবে, যে কোন একটা বা দু’টোই পেতে।
ডাঃ তাহলে তো বড় মুস্কিলের কথা। চিটাগাং-এ আর কোথাও পাওয়া যায় না? মানে অন্য কোন দোকানে? তুমি চাইলে আমি নিজে বা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের বলে ঢাকায় চেষ্টা করে দেখতে পারি। কি ওগুলো?
ইঞ্জিঃ থাক, তোমাকে খামকা কষ্ট করতে হবে না। ওগুলো তেমন কিছু না। ঠিকমতো জানা না থাকলে যত্রতত্র খুঁজে পাওয়াও যায় না। অবশ্য এগুলের নাম সবাই জানে। একেবারে অতি সাধারণ জিনিষ। অনেকটা তোমার ঐ এডিমা বা এক্লামশিয়ার মতো।
0 Comments:
Post a Comment