This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

কুড়িগ্রামের হীরকখণ্ড সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার কোহিনূর রহমান | আব্দুল কাইয়ুম রন্জু

জাতীয় দলের ফুটবলার কোহিনূর রহমান




ভারত উপমহাদেশ থেকে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মূল্যবান হীরকখন্ড কোহিনূর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দখলে গেলেও  ৭০ দশকে এসে কোহিনূর নামের এক মুল্যবান মানব সম্পদের দেখা মেলে উত্তরের অবহেলিত জনপদ কুড়িগ্রামের মোল্লা পাড়ায় ।বাবা জনাব আব্দুল খালেক এবং মা বেগম শামসুন নাহারের চতুর্থ পুত্র হয়ে এ পৃথিবীতে আগমন কোহিনূর রহমানের । সেসময় বাবা-চাচারা কুড়িগ্রামের অত্র অঞ্চলে ফুটবল শাসন করতো । তাঁদের দেখানো পথে একজন কোহিনূর রহমানের সৃষ্টি কুড়িগ্রামে ।                   

তখন ফুটবলের স্বর্ণযুগ । এমনই সময় কোহিনূর একটু একটু আলো ছড়াতে শুরু করলো কুড়িগ্রামের ফুটবলের সূতিকাগার খ্যাত মোল্লাপাড়ায়। বাড়ির সামনে বিস্তর গওহরপার্ক মাঠ । সেই মাঠেই সকাল-বিকেল অনুশীলন। একজন বিখ্যাত ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন চোখে মুখে । মূলত কোহিনুরের ফুটবলে হাতেখড়ি কুড়িগ্রাম পুরাতন শহরের রিভার ভিউ হাই স্কুলে। খুব অল্প বয়স থেকে তাঁর নৈপুণ্যের দ্যুতি ছড়াতে থাকে দেশের ফুটবল অঙ্গনে । ঢাকা ,খুলনা ,রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার লীগে ও টুর্নামেন্টে নজর কাড়া পারফর্মেন্স ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগের দল সাধারণ বীমায় খেলার সুযোগ করে দেয় । পরের বছর শান্তিনগরের হয়ে আগাখান গোল্ড কাপে অংশগ্রহণ করেন । থাইল্যান্ডের রাজবিথী ক্লাবের বিপক্ষে দ্রুত গতিতে গোল করে কোহিনূর প্রশংসা কুড়ান । ১৯৭৭ খ্রিঃ তিনি ঢাকা প্রথম বিভাগের নামীদল ওয়াপদার হয়ে আগাখান গোল্ড কাপে সুনাম অর্জন করেন । ১৯৭৮ খ্রিঃ ঢাকা প্রথম বিভাগ লীগে ওয়াপদার হয়ে ৮টি গোল করেন । দিলকুশার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে হ্যাট্রিক করেন । ১৯৭৮ খ্রিঃ শেরেবাংলা কাপ জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে টাঙ্গাইলের বিরুদ্ধে জয়সুচক গোল করে রংপুর জেলা দলকে ফাইনালে তুলে নিয়ে আসার পিছনে কোহিনূরের অনবদ্য অবদান আজও অম্লান স্মৃতি হয়ে আছে।

১৯৭৯ খ্রিঃ কুড়িগ্রামের গর্ব কোহিনুব্র রহমান এ দেশের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব ঢাকা মোহামেডানের সাদাকালো জার্সি গায়ে জড়ান । ক্ষিপ্ত গতি সম্পন্ন এই রাইট উইঙ্গার সেই মৌসুমে লীগের প্রথম খেলায় ধানমন্ডি ক্লাবের বিরুদ্ধে জয়সুচক গোলটি করেন। ১৯৮২ খ্রিঃ লীগের শেষ খেলায় লীগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর বিপক্ষে গোল করেন । সে বছর ঢাকা লীগে মোহামেডানের কৃতি স্টাইকার সালাম মুর্শেদি ২৭টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড অর্জন করেন যা অদ্যাবধি কেউ ভাঙ্গতে পারেনি। সালাম মুর্শেদির এই সর্বোচ্চ  গোলদাতার পিছনে কোহিনূর অসামান্য অবদান রাখেন। সে মৌসুমে মোহামেডান লীগ চ্যাম্পিয়ন হয় ।

১৯৮৩খ্রিঃ মারাত্মক ইনজুরিতে পড়ে কোহিনূরের ফুটবল ক্যারিয়ারে ছন্দপতন হয়। নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ১৯৮৫ খ্রিঃ  পর্যন্ত কোহিনূর ঢাকা প্রথম বিভাগ লীগে কখনো ঢাকা ওয়ান্ডারর্স বা অন্য কোন দলের হয়ে খেলেন । ১৯৮৬ শেরেবাংলা কাপ জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে কুড়িগ্রাম জেলা দলকে সেমিফাইনালে উঠার পিছনে কোহিনূর বিশেষ ভুমিকা রাখেন। সে বছরই তিনি ফুটবলের জগত থেকে অবসর নিয়ে অ্যামেরিকায় পরিবার পরিজনসহ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।       

এ দেশের ফুটবলের ইতিহাসে কোহিনূরের উল্লেখযোগ্য সাফল্যঃ--

ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান দলের সদস্য ১৯৮০,১৯৮১,১৯৮২

লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান ক্লাবের সদস্য ১৯৮০.১৯৮২

বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসাবে ঢাকা মোহামেডান ভারতের দুর্গাপুরে আশীষ-

জব্বার স্মৃতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় তিনি সে দলের সদস্য ছিলেন।

জাতীয় দলের হয়ে সবুজ দলের পক্ষে ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৮১ খ্রিঃ জাতীয় দলের হয়ে পাকিস্তানে কায়েদা আজম ট্রফি খেলেন ।

১৯৮২ দিল্লীতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ।

সোনালী অতীতে কোহিনূর রহমান ঃ-   

সত্তর-আশি দশকে দেশব্যাপী ফুটবলের মাতম । ফুটবল জোয়ারে ভাসছি আমরা। ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের পয়েন্ট টেবিল আমাদের হাতের গনায়। রেডিও টিভিতে চোখ কান পেতে থাকি । দৈনিক বাসি পত্রিকায় খেলার পাতা নিয়ে কাড়াকাড়ি করি । পাক্ষিক ক্রীড়া জগতের খোঁজে এদিক ওদিক চেয়ে থাকি । গোটা দেশ দুটো শিবিরে বিভক্ত । একদিকে ঐতিহ্যের প্রতীক ঢাকা মোহামেডান আর অন্যদিকে আধুনিকতার প্রতীক আবাহনী ক্রীড়া চক্র। এখন যেমন বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকায় ছেয়ে যায় দেশ ঠিক তখন আবাহনী-মোহামেডানের খেলায় সাদা-কাল আকাশী-হলুদ পতাকায় ছেয়ে যায় সারা দেশ । আমি আবাহনীর মেঝভাই জালাল হোসেন লাইজু মোহামেডানের । এক বাড়িতে দুই দলের পতাকা নিয়ে টানাটানি। সেই ফুটবলের ক্রেজে কুড়িগ্রামের একজন কোহিনুর ঢাকা মোহামেডানে খেলছে চোখ মন গর্বে ভোরে যায় ।কখন যে সমর্থন দূর্বার ছুটে চলা কোহিনূর ভাইয়ের পায়ের কারুকাজে মিশে যায় বুঝাই যায় না । ভিতর থেকে মনটা বলে উঠে আবাহনী জিতুক তবে কোহিনূরভাই গোল দিক।

কোহিনূর পাগল আমার মেঝভাই তার পুরো রুমটা কোহিনূরভাইয়ের ছবির পেপার কাটিংএ ভেসে দিয়েছে। রুমের দেওয়ালে চোখ পাততেই ১১ নম্বর জার্সির ছড়াছড়ি । তখন ঢাকা মোহামেডানে ১১ নম্বর জার্সিতে রাইট উইঙ্গার হিসেবে কোহিনুরভাই আর ১২ নম্বর জার্সিতে লেফট উইঙ্গার হিসেবে গাফফার বল নিয়ে ছুটে চলায় স্টাইকার সালাম গোলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। কোহিনূর ভাইয়ের পায়ে বল আর পূর্ব গ্যালারী থেকে হটপেটিস হটপেটিস বলে ভক্তদের আমুদেয় চিৎকার । আমরা অপেক্ষায় থাকি লীগ শেষে কবে কোহিনূরভাই কুড়িগ্রামে ফিরবে। আমাদের আইডল তখন কোহিনূরভাই। হবেই না বা কেন ? রোগ,শোক,অভাব অনটনের কুড়িগ্রামের তখন অহংকার করে বলার মত আর কি বা আছে !   

ক্রিকেটের সুদিনে ফুটবল ক্রেজ এখন অতীত । তবুও সার্বিক চেষ্টা চলছে ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার । পুরো দেশের মত কুড়িগ্রামেও চলছে বিভিন্ন কর্নার থেকে ফুটবলের উন্নয়নের নানাবিধ প্রচেষ্টা । ফুটবল হউক কুড়িগ্রামের নগরী এই আহবানে সাড়া দিয়ে সুদূর অ্যামেরিকা থেকে কোহিনূরভাই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । এখন প্রতিনিয়ত তার মনটা এখানেই পড়ে থাকে।

ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে,এদেশের ফুটবলকে বিশ্বমানে পৌঁছাতে প্রয়োজন দ্রুত ফুটবল কাঠামোকে ঢেলে সাজানো ,সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন খাতে পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো সর্বোপরি কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে ফুটবল প্রেম হৃদয়ে ধারণ তবেই হয়তো একাধিক কোহিনূরের পায়ের আওয়াজ শুনতে পাবে কুড়িগ্রাম তথা গোটা বাংলাদেশ ।


-----
পুনশ্চঃ 
লেখা এবং ছবি লেখকের fb ID থেকে সংগৃহীত।

কবিতা : প্রেম | দেবযানী কথাসব

দেবযানী কথাসব

কবি দেবযানী কথাসব
চলো, আর একবার আমার প্রেমিক 
হয়ে যাও 
আমিও  গাছ-কোমর ধনেখালি 
পাড় শাড়ি।

আরো একবার তোমার হাসিতে
ধুয়ে যেতে যেতে ঈশ্বরী
 হয়ে যাবো
কিম্বা ধানক্ষেত ফিঙে।

এলো মেলো হয়ে যাওয়া ক্ষণ
বদলে যাওয়া আঙুল ছোঁয়া 
স্তব্ধ সময় 

আবেগ বিবাগী মন 
কবিতা শব্দের মাঝে আড়াল
পিয়াসী হলে

কামরাঙা  সকালের আলো
মাধবীলতার হাসিতে বেফাঁস ।

আর একবার মাতাল হতে 
সাগর বালি আড়ি
খুচরো ঝিনুক কিম্বা আমাদের 
স্বপ্ন বালি বাড়ি 
ভেসে যাওয়া ঢেউয়ে ।

কত কত পাহাড়ের খাঁজে 
আমাদের হাসিগুলো যতো
এখনো ঘুরে ঘুরে যায় 

তারই সাথে মিশে যাওয়া 
দীর্ঘশ্বাসে উদাসী হাওয়া,
 হয়তো ।

চলো আর একবার প্রেমিক 
হয়ে যাও
স্বপ্নদের ছুঁয়ে নেওয়া আদর 
জল রঙ
ক্যানভাসে ইচ্ছে ঘোড়ারা ছোটে
আমার উপোসী ঠোঁটে ।

ছোট ছোট কষ্ট গুলোকে যদিনা 
কষ্ট মনে হয়
ক্ষয়ে যাওয়া বিশ্বাসেরা 
ততো বড়ো ক্ষয় যদিনা মনে হয়

এখনো ঠোঁটের হাসি কনা 
কিছুটা  দামি মনে হয়
চলো, 
প্রেমিক হয়ে যাই ।।

-----
পুনশ্চঃ ছবি এবং লেখা কবির fb ID থেকে সংগৃহীত।

ঠিকানা পেল 'স্বাধীন'



অবশেষে পাগলি নাসিমার সন্তানের মা হলেন জোবেদ আলীর কন্যা মৌসুমী। মৌসুমী- মমিনুল দম্পত্তির ১০ বছরের বিবাহিত জীবনে কোন সন্তান নেই। তারা শিশুটিকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। তাই আজ বিকেল ৪ টায় জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন নিজ হাতে এই শিশু স্বাধীনকে মৌসুমীর কোলে তুলে দেন। এসময় তিনি ফুলবাড়ীর সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার  দেবেন্দ্র নাথ ওঁরাও এর পক্ষ থেকে শিশুটির জন্য ১০০ ডলার মৌসুমীর হাতে তুলে দেন। জেলা প্রশাসক পাগলি নাসিমার সন্তান জন্মের পরে পরেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি শিশুটির নামও রেখেছিলেন 'স্বাধীন'!  শিশু ও মা পাগলির চিকিৎসার তদারকি করেছেন।

মৌসুমী- মমিনুল শিশুটির সাথে তার জন্মদাত্রী পাগলি নাসিমারও দায়িত্ব নেন।

নির্বাক কোকিল

কোকিল



সে বসন্তেই কোকিলের সুর থেমে গেল
চিরদিনের তরে যৌবনের অপমৃত্যু হল
তার সময় তার সংসার ধুলোয় লুটে গেল
দুঃখ শোকে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠলো।
সে ক্ষোভে অভিমানে-
আর কোনদিন গান করলো না
বহমান কালের খেয়ায়
আর কোনদিন আনন্দে মাতলো না।
এখন, 
আগের মত তার শক্তি নেই
দেহে তারুন্যের উদ্দম নেই
চোখের চাহনিতে প্রেম নেই
তার মুক্ত আকাশ নেই, সবুজ প্রকৃতি নেই।
দুরন্ত কোকিল,
এখন শূণ্য আকাশে উড়াল দিতে ভয় পায়
ধরিত্রীর নরম সবুজ ঘাঁষে পা ফেলে চলতে ভয় পায়।
তাই সে নির্জন নিঃসঙ্গতা ভালোবাসে
আলোকে অস্থির হয়ে অন্ধ্যকার ভালোবাসে।
তার ভেতরের জ্বালা
গ্রীষ্মের দাবদাহে খেলা করে
তার শীতল অশ্রু
বর্ষার অথৈজলে মিশে চলে
হাড় কাঁপানো প্রখর শীতেও
কোকিল স্বাক্ষি শিমুলের ডালে বসে থাকে।
অতঃপর,
প্রাকৃতিক নিয়মে বসন্ত নেমে আসে
নতুন করে পৃথিবী ও প্রকৃতি সাজে 
বৃক্ষ ও তরুলতায় ফুলের মুকুল আসে
শিমুলের রক্তরাঙা ফুল ফোঁটে
মাটির বুকে উল্লাসে মেতে ওঠে মানুষ নামের অমানুষগুলো
কোকিলের ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত হৃদয়ে-
ভেসে ওঠে প্রিয়সীর পবিত্র মুখ
ভেসে ওঠে বুলেটবিদ্ধ প্রিয়সীর নিথর রক্তমাখা শরীর
কানে ভেসে আসে প্রিয়সীর করুন চিৎকার...
নির্বাক কোকিলের অশ্রু গড়িয়ে চলে
সে সুখের এ অপবিত্র নগরীকে শত ধিক্কারে বিদায় জানায়
এ বসন্তেই উড়াল দেয় দুঃখের নগরীতে।
-----
কবিতাঃ নির্বাক কোকিল
কবিঃ আনু ইসলাম

হে সব্যসাচী

আনু ইসলাম


শতরুপা রুপে অপরুপা
হেথা প্রিয়তমা ধরলার বক্ষে পলির রঙ্গ,
ভরা যৌবনে প্রবাহমান
চির ক্ষরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের উত্তাল তরঙ্গ।
নিরুদ্দেশের উদ্দেশে ছুটে
নিয়ত আসতে স্মৃতি ঘেরা বাহের দেশে,
বজ্রকণ্ঠত জনসমুদ্রে
'মঙ্গা নয় চাঙ্গার দেশ' রটিলে স্ব-বেশে।
প্রত্যুষ রবি- রাতের চন্দ্র
নীলাম্বর-নীলাচল-মিষ্ট পবন সঙ্গ,
হে কবি- হে সব্যসাচী
সর্বকাল ধরে তোমাতে বিস্মিত বঙ্গ।
জন্ম ধন্য হে- গর্বিত মোরা
কুড়িগ্রামের মাটিতে প্রথম ডেকেছ মা,
কাঁদিয়ে বাংলা চলিলে তুমি
পিঞ্জর জুড়িলো জননী ফের ডাকিলে মা।
------
কবিতাঃ হে সব্যসাচী
কবিঃ আনু ইসলাম

পাগলীর সন্তান ও আমাদের অবস্থান | বাদশাহ্ সৈকত

বাদশাহ্ সৈকত
লেখকঃ বাদশাহ্ সৈকত

আবারো পাগলীকে নিয়ে লিখতে বাধ্য হলাম। কেন না বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সত্যিই আমাকে কিছুটা হলেও মর্মাহত করে তুলেছে। এর আগেও "পাগলীর সন্তান প্রসব" শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম। আবারো একই ঘটনা। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এক পাগলীর ছেলে সন্তান প্রসব। কিন্তু সেই সন্তানের জনকদের আমরা খুঁজে বের করতে পারি না।

আমাদের এতো পুলিশ, গোয়েন্দা, ডিবি, এসবি থাকতে পাগলীদের সাথে যৌন সঙ্গমকারীদের খুঁজে পাই না। নাকি অভিযোগ কারী না থাকলে এই জেনাকারী পুরুষদের খোঁজার কোন নিয়ম নাই। নাকি পাগলীদের ধর্ষনের বিষয়ে এদেশের সংবিধানে কোন আইন নাই এজন্যই তাদের খোঁজা হয় না। নাকি সেখানে কোন লাভ-লসের হিসাব নাই এজন্য সে বিষয়ে প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নাই।

ঘটনার বিবরন দেয়ার আগে পাগল বা পাগলী বিষয়ে আমার উপলদ্ধির কথা বলতে চাই। সেটা এরকম যে সৃষ্টি কর্তা এই মানব জাতির মধ্যে কিছু মানুষকে পাগল বানিয়েছেন। যাতে করে যারা পাগল হননি তারা এই পাগলদের দেখে ভাবতে পারেন যে সৃষ্টি কর্তা যে কোন মুহুর্তে তাদেরকেও পাগল বা পাগলী বানাতে পারেন। এই উপলদ্ধি থেকেই তারা যেন সৃষ্টি কর্তাকে ভয় করেন।

আর একটা উপলদ্ধি কথা না বললে নয়। আমার উপলদ্ধিতে পাগল হলো একটা সম্পুর্ণ স্বাধীন চেতনার নাম। পাগলদের কোন ঘর-বাড়ি থাকে না। তাদেরকে কোন ঘর-বাড়িতে আপনজনেরাও আটকিয়ে রাখতে পারে না। তারা দেশের আইন মানে না, রাজনীতি করে না। কাজ করে না, ব্যবসা-বানিজ্যও করে না। ভালো পোশাক পড়ে না, ভালো খাবারও খায় না। এক কথায় পৃথিবীতে তাদের কোন দায় বদ্ধতা নেই।

কিন্তু হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়া এই পাগলী কোন দায় বদ্ধতা থেকে সন্তান জন্ম দিলো। নাকি আমাদের মতোই সুস্থ দিনের বেলায় ভদ্র কোন পুরুষ তাকে দায় বদ্ধতায় ফেলে দিয়েছে।
পাগলীর সন্তান জন্ম দেয়ার এ ঘটনায় প্রাগৈতিহাসিক গল্পটার কথা মনে পড়ে গেল। এক সময়ের ডাকাত শেষ বয়সে এসে ভিক্ষা বৃত্তি করে খেলেও তার কিন্তু যৌবনের ক্ষধা শেষ হয়ে যায়নি। সে সময় সুযোগ বুঝে এক ভিখারিনীকে কাঁধে তুলে জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং যৌন ক্ষুধা মিটায়। বাঁধা দেয় না ভিখারিনীও। কেন না তারও তো একই ক্ষুধা আছে। এমন ঘটনা সন্তান জন্ম দেয়া এ পাগলীর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। কিন্তু সেটারও তো তদন্ত হওয়া উচিৎ নয় কি?
আর যদি কোন পাগল পাগলীর সাথে প্রাগৈতিহাসিকের মতো ঘটনা না ঘটিয়ে থাকে তাহলে এর দায়ভার কে নিবে।

গুটি কয়েকজন যুবক বা ব্যাক্তি পাগলীর প্রেগনেন্ট হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে অতি উৎসাহী হয়ে তাকে জোড় করে রাস্তা থেকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং ফ্রীতে মেডিকেল চেকআপ করিয়ে প্রেগনোন্সির বিষয়টি নিশ্চিত হয়। কিন্তু এই পাগলী তারপর থেকে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তাকে পাহাড়া দেয়ার দায়িত্ব কেউ নেয়নি। কেন না এই সময়ের মধ্যে পাগলী বহুবার হাসপাতাল ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়েছ আবার ফিরে এসেছে অবস্থায় গর্ভবতী পাগগলীর দাযভার নিতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। এ রকম একটা অবস্থার এক সময হাসপাতালেই পাগলীর প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং পাগলী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।

বিষয়টি জানার পর অনেকেই উৎসাহী হয়ে ওঠে এবং হাসপাতালে পাগলীর সন্তান ও পাগলীকে দেখতে যাচ্ছেন। এমন কি পাগলী ও তার সন্তানকে জামা কাপড়ও কিনে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় কুড়িগ্রামের  জেলা প্রশাসকও জামা-কাপড় পাঠিয়েছেন।
এখন আমার যেটা চাওয়া সেটা হলো যারা পাগলীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন এবং প্রশাসনের যারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন তাদের উচিৎ পাগলীর সন্তানের বাবা যেই হোক তাদেরকে খুঁজে বের করা এবং মুখশ উন্মোচিত করা। তানাহলে মানুষের চরিত্র নিমজ্জিত হতে হতে তলানীতে গিয়ে ঠেকবে।



পুনশ্চঃ ছবি এবং লেখা লেখকের fb প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত।

কথা দিয়েছিলে | সখিনা সুলতানা ঝর্ণা

কবিঃ সখিনা সুলতানা ঝর্ণা


কথা দিয়েছিলে মাছরাঙ্গা গোধূলিতে
আমাদের হবে কথা।
তোমার কথার ঝংকারে ঝঙ্কৃত হবো।
হবো শিহরিত।
রক্ত কণিকায় জোয়ার বইবে
আছড়ে পড়বে বিশুষ্ক হৃদয়কূলে।
প্রেমের মঞ্জরি অশ্রুকণা হয়ে ঝরবে
আমার আঁখিপল্লবে
সিক্তপ্রায় তুমিও হবে শিহরিত।
তোমার রক্ত কণিকায় শিহরণ জাগবে
চাইবে আমাকে বুকের পিঞ্জরে দুহাতে
পিষ্ঠ করতে।
কিন্তু,
তুমিতো কথা রাখলে না!
আমি ইথারে কান পেতেছি ;
বাতাসে আঁচল মেলেছি;
নীলিমায় চোখ রেখেছি ;
তবুও তুমি কথা রাখলে
না।
কথা দিয়েছিলে মাছরাঙ্গা গোধুলিতে
আমাদের হবে কথা।
------
                    কবিতাঃ কথা দিয়েছিলে
                 কবিঃ সখিনা সুলতানা ঝর্ণা

আমার একটি স্বপ্ন আছেঃ মার্টিন লুথার কিং

বক্তব্যরতাবস্থায় মার্টিন লুথার কিং


ইতিহাস ডেস্ক :মার্টিন লুথার কিং আমেরিকায় বর্ণবৈষম্য দূর করার পেছনে একজন অগ্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে তিনি একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ভাষণটি সবাই এখন ‘I have a dream’ শিরোনামে জানে। এই ভাষণে উঠে এসেছে নিগ্রোদের প্রতি অত্যাচারের কথা, তাদের বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথা। তিনি বলেছেন তার স্বপ্নের কথা। স্বপ্ন দেখেছেন সাম্যের, স্বপ্ন দেখেছেন শোষণমুক্ত এক সমাজের যেখানে সব মানুষ সমান হবে। আজ সেই ভাষণ বাংলায় উপস্থাপন করা হলো রোর বাংলার পাঠকদের জন্য।
  • Advertisement 
  • “আপনাদের সাথে থাকতে পেরে গর্বিত অনুভব করছি। আজকের এই দিন ইতিহাসের পাতায় আমাদের দেশের স্বাধীনতার নিদর্শন হিসেবে লেখা থাকবে। পাঁচ বছর আগে একজন মহান আমেরিকান মুক্তির ঘোষণা সই করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ আইনটি লাখ লাখ নিগ্রো দাসের কাছে আশার আলো হিসেবে এসেছিল, যারা বিধ্বংসী অবিচারের আগুনে পুড়ছিল। রাতভর অত্যাচারের পর এটা এসেছিল ভোর হিসেবে।
কিন্তু এর একশ বছর পরেও নিগ্রোরা স্বাধীন নয়। একশ বছর পরেও নিগ্রোরা পৃথকীকরণ এবং বৈষম্যের বেড়াজালে বন্দী হয়ে আছে। একশ বছর পরেও নিগ্রোরা আজ জাগতিক ধন-সম্পদের সাগরে দারিদ্র্যের এক দ্বীপে বাস করে। একশ বছর পরেও নিগ্রোদের আমেরিকান সমাজের এক কোনায় দুর্বল করে ফেলে রাখা হয়েছে, যেন নিজেদের দেশে নিজেরাই নির্বাসিত। আমরা আজ এই লজ্জাজনক অবস্থার রূপ দেখতে এসেছি।
  • আমরা এক অর্থে দেশের রাজধানীতে এসেছি একটা চেক ভাঙানোর জন্য। যখন আমাদের দেশের কারিগরেরা সংবিধানের অসাধারণ শব্দগুলো লিখেছিলেন এবং স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন, তখন আসলে তারা একটি কর্জপত্র সই করছিলেন, যার উপর সব আমেরিকানের অধিকার আছে। এটা একটা অঙ্গীকার ছিল যে, সব মানুষ সাদা-কালো নির্বিশেষে ‘জীবন, স্বাধীনতা এবং সুখের’ জন্য একই অধিকার পাবে। বর্ণভেদে আমেরিকা এই অঙ্গীকার পালনে ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকা নিগ্রোদের একটি খারাপ চেক দিয়েছে, যে চেকে লেখা আছে পর্যাপ্ত ব্যাল্যান্স নেই।
  • মার্টিন লুথার কিং; Source: getty images
  • কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি না বিচারের ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি না এই দেশের বিশাল ভল্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ নেই। আর তাই আমারা এই চেক ভাঙাতে এসেছি, যে চেক আমাদের স্বাধীনতা এবং সুবিচার দেবে।
  • আমরা এই পবিত্র জায়গায় এসেছি আমেরিকাকে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার গুরুত্বকে মনে করিয়ে দিতে। অবস্থা শান্ত হওয়ার জন্য সময় দেয়ার কিংবা ক্রমানুসারে পরিবর্তনের ঘুমের ওষুধ খাওয়ার বিলাসিতা করার সময় নেই। এখনই গণতন্ত্রের প্রতি সত্যিকারের অঙ্গীকার করার সময়। এখনই অন্ধকার থেকে জেগে ওঠার এবং বৈষম্যের উপত্যকাকে জনশূন্য করে সূর্যের আলোয় স্নাত জাতিগত ন্যায়বিচারের দিকে যাওয়ার সময়। এখনই সময় আমাদের দেশকে জাতিগত অবিচারের চোরাবালি থেকে উঠিয়ে ভ্রাতৃত্বের কঠিন পাথরে নিয়ে আসার। এখনই সময় ঈশ্বরের সব সন্তানের জন্য ন্যায়বিচারকে বাস্তবে পরিণত করার।
  • Advertisement 
  • এই মুহূর্তের গুরুত্বকে এড়িয়ে গেলে তা এই দেশের জন্য সর্বনাশা হবে। নিগ্রোদের বৈধ অসন্তোষের এই তীব্র তাপ ততক্ষণ পর্যন্ত যাবে না যতক্ষণ না স্বাধীনতা ও সাম্যের উদ্দীপ্ত শরৎকাল আসবে। ১৯৬৩ শেষ নয়, বরং শুরু। যারা আশা করে নিগ্রোদের ঠাণ্ডা হওয়া উচিত, তারা এখন তুষ্ট হবে, কারণ পুরো দেশ জেগে উঠলে এটা খুব কঠিন এক জাগরণ হবে। নিগ্রোদের নাগরিক অধিকার দেয়ার আগপর্যন্ত আমেরিকাতে কোনো বিশ্রাম থাকবে না। ন্যায়বিচারের দিন আসার আগপর্যন্ত বিদ্রোহের ঘূর্ণিঝড় এ দেশের ভীতকে নাড়াতে থাকবে।
  • রিচার্ড নিক্সনের সাথে মার্টিন লুথার কিং; Source: The Daily Beast
  • যারা ন্যায়বিচারের প্রাসাদের পথে দাঁড়িয়ে আছে, আমি আমার সেই মানুষদের বলতে চাই। আমাদের বৈধ দাবি আদায়ের জন্য কোনো ভুল কাজ করব না। আমরা আমাদের স্বাধীনতার তৃষ্ণাকে তিক্ততা এবং ঘৃণার পেয়ালা থেকে নিবারণ করবো না। আমাদের সৃজনশীল প্রতিবাদকে শারীরিক আক্রমণে পরিণত করবো না। আমরা বারংবার শারীরিক শক্তির সাথে আত্মিক শক্তির মিলন ঘটাবো।
  • নতুন জঙ্গিবাদ নিগ্রো সম্প্রদায়কে গ্রাস করে ফেলেছে। এটা যাতে সব শ্বেতাঙ্গের প্রতি আমাদের অবিশ্বাস গড়ে না তোলে। অনেক শ্বেতাঙ্গ ভাইদের কারণে আজকে আমাদের এখানে আসা সম্ভব হয়েছে। আমরা এটা বুঝতে পেরেছি যে তাদের ভাগ্য আমাদের ভাগ্যের সাথে একই সুতায় বাঁধা। তারাও বুঝতে পেরেছে তাদের স্বাধীনতা আমাদের স্বাধীনতার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
  • আমরা একা চলতে পারবো না। এবং যখন আমরা হাঁটবো আমাদের এই পণ করা উচিত, আমরা সবসময় সামনের দিকে এগোবো। আমাদের পেছনে ফেরা যাবে না।
  • তারা নাগরিক অধিকার সেবকদের জিজ্ঞেস করে, “তোমরা কখন সন্তুষ্ট হবে?” আমরা কখনও সন্তুষ্ট হবো না যতক্ষণ পর্যন্ত নিগ্রোরা পুলিশের অকথ্য ভয়ঙ্কর বর্বরতার শিকার হবে। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিদেশ ভ্রমণে অবসাদগ্রস্ত দেহ রাজপথের পাশের মোটেলে, শহরের হোটেলে থাকার জায়গা পাবে না। আমরা সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ পর্যন্ত নিগ্রোদের গতিশীলতা কেবল ছোট বস্তি থেকে বড় বস্তিতে। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ পর্যন্ত ‘শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গদের জন্য’ এই প্রতীক দিয়ে আমাদের শিশুদের আত্মপরিচয়, তাদের মর্যাদা ছিনিয়ে নেয়া হবে। আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট হব না যতদিন মিসিসিপির নিগ্রোরা ভোট দিতে পারবে না এবং নিউইয়র্কের নিগ্রোরা ভোট দেয়ার মতো কাউকে পাবে না। না, না, আমরা সন্তুষ্ট না এবং সন্তুষ্ট হব না যতদিন ন্যায়বিচার পানির মতো বইবে না, ন্যায়পরায়ণতা বিশাল স্রোতের মতো বইবে না।
  • Advertisement 
  • নিজ বাসায় মার্টিন লুথার কিং; Source: gettyimages
  • তোমরা এখানে অনেকেই কঠিন দুঃখ কষ্টের মধ্য থেকে এসেছ, এ ব্যাপারে আমি উদাসীন নই। তোমাদের কেউ সদ্য জেল থেকে এসেছ। তোমাদের অনেকেই এমন জায়গা থেকে এসেছ যেখানে তোমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে নিপীড়নের ঝড় দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে এবং পুলিশি নির্মমতার ঝড়ো হাওয়া দিয়ে ছুরি মারা হয়েছে। বিশ্বাসের সাথে কাজ করছ, কিন্তু যে কষ্টের মূল্য পাওয়া যায় না তা মুক্তির ডাক আনে। মিসিসিপি, আলাবামা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, লুইজিয়ানাতে ফিরে যাও, বস্তি এবং মহল্লাতে ফিরে যাও, এই অবস্থা পরিবর্তন হতে পারে এবং পরিবর্তন হবে।
  • বন্ধুরা, আজ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা হতাশার উপত্যকায় অধঃপতিত হবে না। যদিও আমরা আজকের এবং কালকের বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি, তা-ও আমার একটি স্বপ্ন আছে। এই স্বপ্নের শিকড় আমেরিকান স্বপ্নের মধ্যে প্রোথিত।
  • আমি স্বপ্ন দেখি এই জাতি একদিন জেগে উঠবে এবং এর ধর্মবিশ্বাসের সত্যকে জীবনে কাজে লাগাবে যে, “আমরা এই সত্যগুলোকে প্রমাণিত বলে মানি যে, সব মানুষকে সমান করে সৃষ্টি করা হয়েছে।”
  • আমি স্বপ্ন দেখি একদিন জর্জিয়ার লাল পাহাড়ে, আগের দাসদের সন্তানরা এবং আগের দাস মালিকদের সন্তানরা ভ্রাতৃত্বের টেবিলে একসাথে বসতে পারবে। আমি স্বপ্ন দেখি, এমনকি মিসিসিপি প্রদেশ যেটা অবিচার এবং নিপীড়নের তীব্র তাপে জর্জরিত, তা-ও একদিন স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের আশ্রয়স্থলে পরিণত হবে।
  • আমি স্বপ্ন দেখি আমার ছোট ছোট চার সন্তান এমন একটি দেশে বাস করবে যেখানে তাদেরকে তাদের গায়ের রং দিয়ে বিচার করা হবে না, বরং তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে বিচার করা হবে। আজ আমার একটি স্বপ্ন আছে।
  • Advertisement 
  • সন্তানদের সাথে লুথার কিং; Source: gettyimages
  • আমি স্বপ্ন দেখি, আলবামা, যেখানে রয়েছে দুশ্চরিত্র বর্ণবাদী লোক, যেখানের গভর্নরের মুখ থেকে হস্তক্ষেপ এবং অকার্যকর এ ধরনের শব্দ বের হয়, একদিন এই আলবামাতে ছোট ছোট কাল ছেলে মেয়েরা সাদা ছেলেমেয়েদের সাথে ভাই-বোন হিসেবে হাত মেলাবে।
  • আজ আমার একটি স্বপ্ন আছে। আমি স্বপ্ন দেখি, উপত্যকাগুলো সুউচ্চ হবে, প্রতিটি পাহাড় এবং পর্বতকে নিচু করা হবে, বন্ধুর পথকে সমতল করা হবে এবং বাকা জায়গাকে সোজা করা হবে। ঈশ্বরের অলৌকিকতা প্রকাশ পাবে এবং সকল রক্ত-মাংসের মানুষ তা একসাথে দেখবে।
  • এটাই আমাদের আশা এবং আমি এই বিশ্বাসে দক্ষিণে যাই। এই বিশ্বাসের সাথে আমরা হতাশার পর্বত থেকে আশার পাথর খুঁড়ে আনতে পারবো। এই বিশ্বাসের সাথে আমরা অনৈক্যকে ভ্রাতৃত্বের ঐকতানে পরিণত করতে পারবো। এই বিশ্বাসের সাথে আমরা একসাথে কাজ করতে পারবো, একসাথে প্রার্থনা করতে পারবো, একসাথে সংগ্রাম করতে পারবো, একসাথে জেলে যেতে পারবো, স্বাধীনতার জন্য একসাথে দাঁড়াতে পারবো, আমরা জানবো আমরা একদিন স্বাধীন হবো। এবং এটাই হবে সেই দিন- এটাই হবে সেই দিন যেদিন ঈশ্বরের সন্তানেরা নতুন অর্থের সাথে গান গাইতে পারবে-
  • আমার দেশ, এটা স্বাধীনতার ভূমি,আমি এর গান গাই,এখানেই আমার পূর্বপুরুষেরা মারা গিয়েছেন, এটা তীর্থযাত্রীদের গর্ব,প্রতিটি পর্বতের গাত্র থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বেজে উঠুক।এবং আমেরিকাকে যদি একটা মহান রাষ্ট্র হতে হয় তাহলে এটা সত্য হতে হবে।
  • নিউ হ্যাম্পশায়ারের পাহাড়ের চূড়া থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক নিউইয়র্কের বিশাল পর্বত থেকে। পেনসিলভানিয়া এলেগেনির চূড়া থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। কলোরাডোর রকির তুষার চূড়া থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক ক্যালিফোর্নিয়ার মোহনীয় ঢাল থেকে। শুধু তা-ই নয়, জর্জিয়ার শিলা পর্বত থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। টেনেসির পর্বতের দৃশ্য থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক। মিসিসিপির প্রতিটি পাহাড় এবং ঢিবি থেকে স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজুক।
  • Advertisement 
  • শিকাগোতে মার্টিন লুথার কিং; Source: getty images
  • এবং এটা যখন হবে, আমরা যখন স্বাধীনতার ঘণ্টা বাজতে দেবো, প্রতিটা গ্রাম প্রতিটা পল্লী প্রতিটা প্রদেশ প্রতিটা শহর থেকে যখন আমরা স্বাধীনতার ঘণ্টাকে বাজতে দেবো তখন আমরা ঐ দিনটাকে ত্বরান্বিত করব যেদিন ঈশ্বরের সন্তানেরা, কালো এবং সাদা, ইহুদী এবং অইহুদী, প্রটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথোলিক, সবাই মিলে হাত ধরে নিগ্রোদের পুরনো আধ্যাত্মিক গানটা গাইতে পারবে-
  • অবশেষে মুক্তি পেলাম, অবশেষে মুক্তি পেলাম,
    মহাশক্তিশালী ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমরা অবশেষে মুক্তি পেলাম।”
  • ফিচার ইমেজ: Gettyimages  

যেনে নিয়ো তবে | কবিতা


ভালোবাসার প্রতীক

ফুটফুটে সকাল; ঘুম থেকে জেগে
যখন দর্পণ সম্মুখে তুমি দাঁড়াবে এলো কেশে
যদি আনমনা তোমার মাঝে খুঁজে পাও আমায়
যেনে নিয়ো তবে তুমি ভালোবাস আমায়।

প্রিয় কবিতায় বা প্রিয় কোন নোভেলে
যদি তোমায় বলা কথাগুলোর মিল খুঁজে পাও
অথবা খুঁজে পাও সেখানে তোমার আমায়
যেনে নিয়ো তবে তুমি ভালোবাস আমায়।

হঠাৎ গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে
যদি তোমার শান্ত চোখের ভাঁজে, বুকের ভিতরে
নিভৃতে লজ্জাহীনভাবে খুঁজে পাও আমায়
যেনে নিয়ো তবে তুমি ভালোবাস আমায়।

গাঢ় চাঁদনী রাতের অসীম আসমানে
যদি ঐ দূরের তারকার দেশে তুমি হারিয়ে যাও
আর তোমার অশান্ত মন খুঁজে ফেরে আমায়
যেনে নিয়ো তবে তুমি ভালোবাস আমায়।

পরে প্রতীক্ষার সকাল নামবে ধরায়
তোমার বাগানের সদ্য ফোঁটা গোলাপের পাঁপড়িতে
যদি মুচকি হাসো ক্ষণিক; গোলাপ দিবে আমায়
যেনে নিয়ো তবে তুমি ভালোবাস আমায়।
--------
কবিতাঃ যেনে নিয়ো তবে
 কবিঃ আনু ইসলাম

আমার কোন দুঃখ নাই | কবিতা

ভালোবাসার উপহার


fb তে পরতে ক্লিক করুনঃ শঙ্খচিল

কালে-অকালে চলার পথে
কোন রমনীর রঙিন হাত থেকে
একটিও গোলাপ পেলাম না বলে
আমার কোন দুঃখ নাই,
কেননা, ঐ একটি গোলাপের বিপরীতে
হৃদয়ের জমিনে আমি-
হাজারো গোলাপ ফুঁটায় দিয়েছি তাই।

হাতের'পর হাত রেখে
ফুঁটন্ত সকালে অথবা গোধূলি সন্ধ্যে
কেউ এক-সাথে চললো না বলে
আমার কোন দুঃখ নাই,
কেননা, ঐ একটি হাতের বিপরীতে
পথে-পথে, রাজপথে-
লক্ষ-কোটি বিপ্লবী বাহুর ঝংকার শুনতে পাই।

শুধু দারিদ্র্যের দায়ে
মাঠে-ঘাঠে, পৃথিবীর প্রান্তে-প্রান্তে
উপেক্ষা, অবহেলার শেষ নাই বলে
আমার কোন দুঃখ নাই,
কেননা, ঐ উপেক্ষা, অবহেলার বিপরীতে
তোমাদের ভব-দরিয়ায় আমি-
নিযুত-নিযুত প্রেমের সাম্পান বাইয়া যাই।
------
কবিতাঃ আমার কোন দুঃখ নাই
কবিঃ আনু ইসলাম

পাগলী মা হলেও বাবা হয়নি কেউ

পথের পাগলী


পোস্টটি করছেনঃ আসাদুজ্জামান আরিফ

মা কে পেলো, কিন্তু বাবা কে?
প্রশ্নটি সারাজীবন থেকেই যাবে তার।
মায়ের কোলে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে এক পিতৃ পরিচয়হীন বাঙালী। যার মায়ের সাথে নিজের কামনা পূরণ করেছে আমাদের সমাজের কে বা কাহারা। তার ফসল আজ পৃথিবীতে আগমন করলো। কিন্তু শুধুই সে মা পেলো। তার বাবা কে তা কেউ জানেনা। সেদিন Jahanur Rahman Khokon ভাই সহ গেলাম কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে একজন রোগীকে দেখার জন্য। আকাশটাও কিছুক্ষণের জন্য ঝড়লো। রোগী দেখে বের হবো এমতাবস্তায় দেখা হলো ছোটভাই Ah Med Sabbir এর সাথে। ওর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে বিদায় নিলাম। কিন্তু গেটে এসে দেখলাম হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের গেটে মানুষের ভীড়। এগিয়ে গেলাম বিষয় কি তা দেখার জন্য। দেখলাম এই পাগলী বোনটা চিৎকার করছে। হাসপাতালের একজন লোক শুধু বলছে যে পেটে বাচ্চা আছে বোধহয়। সবাই তাকে দেখছে। অবশেষে আমি,  খোকন ভাই ও এখন অপরিচিত লোক তাকে ধরে এমার্জেন্সী ওয়ার্ডের সামনে একটা স্ট্রেচারে শোয়ালাম। এগিয়ে এলো সাব্বির। খোকন ভাই নিজেই অভিভাবকের দ্বায়িত্ব নিলেন। পাগলীকে ভর্তি করানো হতেই আমি ও সাব্বির তাকে নিয়ে গেলাম প্রসূতি ওয়ার্ডে। খোকন ভাই ভর্তির কাগজ পত্র নিয়ে এলে দ্বায়িত্বে থাকা নার্স পরীক্ষা করে আমাদের শিউর করলেন যে পেটে বাচ্চা আছে। কিছু কাপড়ের দরকার ছিলো। Ferose Sarker গুরুকে ফোন করায় কিছুক্ষণ পর তিনি আসলেন কাপড়গুলো নিয়ে। আমরা অপেক্ষা করতেছিলাম। ফোনে আর.এম.ও স্যারের সাথে যোগাযোগ করার পর তিনি আশ্বস্ত করলেন। এক চাচী পাগলীকে কিছু পাউরুটি পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ালেন। অত:পর আমরা সেখান থেকে বের হয়ে বিদায় নিলাম। পরবর্তীকালে খোকন ভাই খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। আমি হঠাৎ অসুস্থ্য হওয়ায় আর যেতে পারিনি। আজ শুনলাম পাগলী তার সেই অনাগত সন্তান প্রসব করেছে।
সেই বাচ্ছাটির জন্য শুভ কামনা রইলো। পাশাপাশি খোকন ভাইকেও ধন্যবাদ সর্বদাই খোঁজ নেয়ার জন্য।


পুনশ্চঃ 
ছবি এবং পোস্ট লেখকের fb প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত।

স্যাটেলাইট কী, কেন, কিভাবে, কোথায়? কী লাভ?

জিওস্টেশনারি ও পোলার স্যাটেলাইটের অরবিট

স্যাটেলাইট শব্দটা জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন জোহানেস কেপলার, ১৬১০ সালে, বৃহস্পতিকে ঘিরে ঘূর্ণায়মান চাঁদগুলোকে বুঝানোর জন্য, যে চাঁদগুলো প্রথম দেখেছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি, তার নিজের নির্মিত টেলিস্কোপ দিয়ে।
মনে প্রশ্ন আসছে না, স্যাটেলাইটের নাম কেন “স্যাটেলাইট”? উত্তরটা দেয়া যাক। স্যাটেলাইট শব্দটা আসছে ল্যাটিন থেকে, যেটার ইংরেজি অনুবাদ করলে দাঁড়ায় “অনুসরণ করা”। চাঁদ পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে, চাঁদ একটি স্যাটেলাইট। পৃথিবী সূর্যকে ঘিরে ঘুরছে, সুতরাং পৃথিবীও একটি স্যাটেলাইট। সূর্য আকাশগঙ্গা গ্যালাক্সিকে ঘিরে ঘুরছে, সুতরাং সূর্যও একটি স্যাটেলাইট। এগুলা হচ্ছে প্রাকৃতিক স্যাটেলাইট। কিন্তু, “মানুষের তৈরি কোনো যন্ত্র পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে” এই ধরণের কিছু বুঝানোর জন্য “স্যাটেলাইট” শব্দটার ব্যবহার হয় প্রথমে থিওরিটিক্যালি, ১৯৩৬ সালে এবং পরে বৈজ্ঞানিকভাবে গৃহীত হয় ১৯৫৭ সালে, যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশে মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায়। স্পুটনিক-১ এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই। এর পরের বছরই ১৯৫৮ সালে আমেরিকা পাঠায় তাদের বানানো প্রথম স্যাটেলাইট, নাম এক্সপ্লোরার-১।

স্যাটেলাইট জিনিসটা আসলে কী?

জিনিসটা আসলে কী? একটা জিনিস রকেট দিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে পাঠিয়ে দিলাম, কেন সেটা ছিটকে পড়ছে না বাইরে? বা, আবার পড়ে যাচ্ছে না পৃথিবীতে? এখানেই বিজ্ঞানের সৌন্দর্য। যে কোনো বস্তুই অন্য বস্তুকে নিজের দিকে টানে, যাকে আমরা মহাকর্ষ বলি। আর, সেই বস্তুগুলার একটা যদি পৃথিবী হয়, তখন পৃথিবী যেই বলে অন্য বস্তুটাকে টানে, তাকে বলে অভিকর্ষ (অর্থাৎ, অভিকর্ষ মহাকর্ষের একটি বিশেষ নাম, যেখানে পৃথিবী অন্তর্ভুক্ত)। এই মহাকর্ষ বলের কারণেই আমরা এবং সৌরজগতের অন্যরা সূর্যের চারিদিকে ঘুরছি অবিরাম। তো, পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে কোনো স্থানে (কক্ষপথে) পৃথিবীর এই আকর্ষণবল এবং পাঠানো বস্তুর গতি, এই দুটোর ভারসাম্য খুঁজে বের করে যদি সেই গতিতে কোন কিছুকে সেখানে পাঠানো হয়, তখন সেটা সেখানে পৃথিবীর আকর্ষণে আটকে গিয়ে ঘুরতে থাকবে পৃথিবীকে ঘিরে। যেহেতু বায়ু বা অন্য কোনো কিছুর বাধা নেই সেখানে, তাই সেই গতিতেই সেটা চলতে থাকে, চলতেই থাকে (নিউটনের গতির প্রথম সূত্র)।
বুঝলাম যে, তারা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। সেখানে তো হাজার হাজার এরকম স্যাটেলাইট ঘুরছে। কিন্তু, তাদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হচ্ছে না কেন? সংঘর্ষ হচ্ছে না কারণ তারা প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন কক্ষপথে এবং ভিন্ন ভিন্ন গতিতে প্রদক্ষিণ করছে পৃথিবীকে। এরপরও যে সংঘর্ষ হয় না, তা না। এইতো ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারিতেই দুইটা কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট এর মধ্যে সংঘর্ষ হলো যারা একটি ছিল আমেরিকার, আরেকটি রাশিয়ার। তবে এটিই এখন পর্যন্ত এই ধরনের একমাত্র ঘটনা।

কেন?

হাজার ট্যাকা খরচ করে পাঠায়ে তো দিলাম। লাভ কী? লাভ হইলো, এইযে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুকে বসে স্যাটেলাইটের প্রয়োজন নিয়ে মজা করছেন, ট্রল করছেন, সেই আপনি যেন আপনার জীবনটা একটু স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে কাটাতে পারেন সেটা নিশ্চিত করা। সেটা কিভাবে করে? সেটা করে আবহাওয়া সম্পর্কে আগাম পূর্বাভাস দিয়ে, যাতে আপনি আপনার প্র্যাতাহিক জীবনে আবহাওয়া, ঝড় ,জলোচ্ছ্বাস, হ্যারিকেন এসব সম্পর্কিত ঝামেলায় কম পড়েন। এরপর ধরেন, অব্যবহৃত ব্রেইনের অকার্যকারিতার কারণে কখনো কোথাও হারিয়ে গেলে যেন নিজের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে অন্যদেরকে নিখুঁত তথ্য দিতে পারেন সেটা নিশ্চিত করা। যেন ফোনে আপনার বন্ধুর সাথে স্যাটেলাইটের অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে, এটা বানাতে এবং পাঠাতে যে হাজার কোটি টাকার অপচয়, সেটা নিয়ে আরও সহজে এবং ঝামেলামুক্তভাবে ঠাট্টা মশকরা করতে পারেন, সেটার ব্যবস্থা করা। ঠাট্টা মশকরা করা শেষ হলে এরপর একটা টিভি চ্যানেল খুলে যেন আরামসে কিছুক্ষণ কোনো ঝামেলা ছাড়া কোয়ালিটি টাইম পাস করতে পারেন, সেটার ব্যবস্থা করা। আপনার জন্য আপাতত এগুলোই। আরও অনেক কিছুই আছে যেগুলা আসলে আপনার দৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় বলে মনে না হওয়াই স্বাভাবিক। যেমন, সূর্য, সৌরঝড়, উল্কাপাত, উল্কাদের গতি-প্রকৃতি এবং সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহগুলো পর্যেবক্ষণ করা। সৌরজগতের বাইরের নক্ষত্র, গ্রহ, গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণ করা যেসব বিজ্ঞানীদেরকে আমাদের এই মহাজগৎ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করবে।

কত প্রকার?

অনেক ধরণের স্যাটেলাইটই আছে। তবে, মূলত যে দুটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত সেদুটি হচ্ছে জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট এবং পোলার অরবিটিং স্যাটেলাইট। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট হচ্ছে সেগুলো যেগুলোর গতি পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির সমান এবং বিষুবরেখা বরাবর পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘুরতে থাকে। ফলে তাদেরকে পৃথিবী থেকে একটা নির্দিষ্ট অবস্থানের সাপেক্ষে স্থির বলে মনে হয়, যেটা এইরূপ নামকরণের কারণ। মূলত রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফোন, কোন কিছুর অবস্থান সম্পর্কে তথ্য (GPS – Global Positioning System) – এই ধরণের যোগাযোগের কাজে ব্যবহৃত হয় এই স্যাটেলাইট।
আরেকটি হচ্ছে পোলার অরবিটিং স্যাটেলাইট। নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে, এটার ঘূর্ণনগতি হচ্ছে পোল টু পোল, মানে উত্তর দক্ষিণ বরাবর। যেহেতু পৃথিবী ঘুরে পূর্ব পশ্চিম বরাবর এবং এই স্যাটেলাইট ঘুরে উত্তর দক্ষিণ বরাবর, তাই এটা পৃথিবীর কোনো একটা অবস্থানের সাপেক্ষে কখনোই স্থির থাকে না, বরং একেকবার পৃথিবীর একেক অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রদক্ষিণ করে। এই ধরণের স্যাটেলাইট মূলত ব্যবহার হয় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য। এটির উচ্চতাও জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট এর তুলনায় অনেক কম। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের ভূপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যেখানে প্রায় ২০,০০০ কিলোমিটার, পোলার স্যাটেলাইট এর ক্ষেত্রে এই দূরত্ব মাত্র ৮৫০ কিমি। ফলে এটি আরও অনেক ভালোভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও ভূপৃষ্ঠ স্ক্যান করতে পারে এবং আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে আরও নিখুঁতভাবে।

বাংলাদেশের জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট, যা প্রথমে মে ১০, ২০১৮ তারিখে লঞ্চ করার কথা ছিল, যেটা কারিগরি সমস্যার কারণে সম্ভব হয়নি; যে কোনো স্যাটেলাইট পাঠানোর ক্ষেত্রে যেটা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। পরের দিন, অর্থাৎ মে ১১, ২০১৮ তারিখে সফলভাবে স্যাটেলাইটটি মহাশূন্যে প্রেরণ করা হয়।
এটা কি বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট? অনেকেই দেখলাম এই ভুলটা করছে। না, এটা বাংলাদেশের পাঠানো প্রথম স্যাটেলাইট না। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো প্রথম স্যাটেলাইট হচ্ছে “ব্র্যাক অন্বেষা”, সেটা একটা পোলার ন্যানো-স্যাটেলাইট যেটা পাঠানো হয়েছে ৩ জুন, ২০১৭ তারিখে। তবে বঙ্গবন্ধু-১ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জিওস্টেশনারি কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট। মজার ব্যাপার হচ্ছে, “ব্র্যাক অন্বেষা”এবং বঙ্গবন্ধু-১, দুটোই স্পেস-এক্স নামক সংস্থার মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
স্যাটেলাইট দুনিয়ায় আমাদের প্রবেশ আরো আগে হলেও কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইটের জগতে আমরা প্রবেশ করেছি বঙ্গবন্ধু-১ এর মাধ্যমে। এটা কি চমৎকার এবং অসাধারণ অনুভূতির একটা ব্যাপার না যে, নিজের দেশের কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট জগতে পদার্পণের মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরেছি আমরা?

লেখা পাঠান

প্রতীকী চিত্র




সুপ্রিয় লেখক,
বাংলাদেশ থেকে বহুল প্রকাশিত ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার পরবর্তি সংখ্যার জন্য লেখা পাঠাতে বিশেষ অনুরোধ করছি।

গল্প , সাহিত্য ,প্রবন্ধ, বিজ্ঞান অথবা বর্তমান রাজনৈতিক ,সামাজিক , অর্থনৈতিক  সমসাময়িক যে কোন বিষয়ের উপর লিখতে পারেন।

দয়া করে এটাচমেন্টে আপনার লিখা পাঠাবেন। প্রতিবার লিখা পাঠাবার সময় আপনার পুরো নাম , ঠিকানা , ফোন ও ছবি পাঠালে খুশি হব।

একই  লিখা অন্য  কোথাও  পাঠাবেন না। অন্য কোথাও প্রকাশ পেলে সে লিখা আমাদের নীতিমালার পরিপন্থী এবং আমরা  ছাপি না।

খুব তাড়াতাড়ি আপনার লিখা আপলোড হবে যদি বিবেচিত হয়। । আমাদের ওয়েব সাইটে চোখ রাখুন। ফেসবুকে শেয়ার করুন।

অপেক্ষায় রইলাম।


শুভেচ্ছান্তে,

আনু ইসলাম

লেখা পাঠিয়ে দিনঃ
anukgc@gmail.com
or,
my fb inbox এ।
FB তে আমিঃ My FB Profile link

অবশেষে সরকার সফল হয়েছে | নাহার কৃপা

Nahar Kripa

পোস্টটি লিখেছেনঃ Nahar Kripa


আন্দোলন কি সফল ? নতুন খসড়া আইন; মন্ত্রী সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে, এটাকে কিঞ্চিত সাফল্য বলা যায়। দুর্ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড পৃথিবীর কোথাও নেই। আমাদের এখানে বলা হল, ইচ্ছেকৃত হত্যা প্রমাণ হলে ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ড। এটা খুবই হাস্যকর হল। কারণ, কোনটা ইচ্ছেকৃত সেটা এই ট্রাফিক ব্যবস্থায় কখনোই প্রমাণ করা যাবে না। আর ইচ্ছে করে ড্রাইভাররা মারতেই বা যাবে কেন। একদম ফিট গাড়ি এবং লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও কি দুর্ঘটনা ঘটে না ? অবশ্যই ঘটে। দুর্ঘটনার কারণ বিবিধ। সাধারণ কিছু উল্লেখ করি, ১) ট্রাফিক আইন না মানা, ২)অদক্ষ ড্রাইভার, ৩)গাড়ির যান্ত্রিক সমস্যা, ৪) পথচারীদের ও যাত্রীদের অসচেতনতা, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, ৫)রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, ৬) ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তার মোড়, ৭) ড্রাইভিং এর সময় মোবাইলে কথা, হেডফোন লাগানো ইত্যাদি নিষিদ্ধ কাজ করা, ৮) ড্রাইভারদের মধ্যে অনৈতিক প্রতিযোগিতা, ৯) প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় গাড়ি চালানো, ১০) মুখোমুখি সংঘর্ষে এক গাড়ির ড্রাইভারসহ সব ঠিক থাকলেও অপর গাড়ির অথবা ড্রাইভারের সমস্যা, ১১) অতিরিক্ত যাত্রী বহন, ১২)ড্রাইভারদের অতিরিক্ত পরিশ্রম আরও ইত্যাদি ইত্যাদি কারণ আছে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অথচ সবচেয়ে অবহেলিত বিষয় হল ড্রাইভারদের মানসিক সক্ষমতার পরীক্ষা। এটা আমাদের দেশে একেবারেই হয় না । অথচ উন্নত বিশ্বে সব ঠিক থাকলেও এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কিছুতেই কেউ লাইসেন্স পাবে না। 

ড্রাইভিং সভ্যতা ও সমাজের জন্য চিকিৎসার মতই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ভুল চিকিৎসায় যেমন রোগীর মৃত্যু হয় ঠিক তেমনি একটু অসতর্ক ড্রাইভিং এ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়। মাথা ঠাণ্ডা রাখা ভালো-ড্রাইভিং এর অন্যতম শর্ত। মানসিক সক্ষমতার পরীক্ষার ফলে কি হয় ? পারিবারিক, ব্যক্তিগত, সামাজিক নানা অশান্তির মধ্যেও গাড়ি চালানোর সময় ড্রাইভাররা মনোযোগ স্থির রাখে, অকারণ অনৈতিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় না, প্রতিটি প্রাণকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা বা পাত্তাহীন মনোভাব থাকে না, যথেষ্ট উপস্থিত বুদ্ধি থাকে, অতি যাত্রী অতি টাকার লোভ থাকলেও সে একটা ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করে, তীব্র গরম- যানজট-চাঁদাবাজি ও পুলিশি হয়রানির পরেও গাড়ি চালানোর সময় মাথা স্থির রাখতে পারে। ইত্যাদি এরকম আরও বেশ কিছু বিষয় আছে যা মানসিক সক্ষমতার সাথে সম্পর্কযুক্ত। আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা জানি, অনিয়মের এই দেশে অসহনীয় সমাজ ব্যবস্থায় আমরা কতটা হতাশ, অধৈর্য ও অসহিষ্ণু হয়ে পড়ি সময়ে সময়ে। পারিপার্শ্বিক নৈরাজ্যে আমাদের মানসিক অবস্থা মোটেই ভালো থাকে না। জীবন দুর্বিষহ মনে হয় কখনো কখনো। ড্রাইভাররা এসবের বাইরে নয়। রাস্তাঘাটে তাদের মানসিক স্খলন ঘটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এসবের মধ্যেও যারা মানসিক সক্ষমতার পরীক্ষায় উতরে যাবেন তাদের দ্বারা দুর্ঘটনা যে খুব কম হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়। কিন্তু ড্রাইভারদের লাইসেন্স দেয়ার ব্যাপারে বর্তমানে বহাল যে নিয়ম কানুন আছে সেগুলোই যখন ঠিকমত মানা হয় না তখন এই পরীক্ষার বিষয় যে ভাগাড়ে থাকবে তা বলাই বাহুল্য। আর নেবেনই বা কারা, খোদ মন্ত্রীই তো মানসিকভাবে অক্ষম ব্যাক্তি। কঠোরতার প্রয়োজন নেই, কিন্তু অসততা না থেকে সিস্টেম প্রপার চললে কত কিছুই না পাল্টে যেতো। এখন দেশের প্রতিটা মানুষকে যেমন রাস্তাঘাটে সচেতন থাকতে হবে তেমনি পরিবহণ কর্মীদেরও দেশের সাধারণ নাগরিক বোধ থেকে নিজে নিজেই সচেতন হতে হবে। এই সিস্টেম বা শাস্তিতে তাদের উন্নতি ঘটবে না। অথচ তাদের এইসব প্রশিক্ষণ দিতে পারতো সওজ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো।


পুনশ্চঃ
ছবি এবং পোস্ট লেখকের fb আইডি থেকে সংগৃহীত।

মঙ্গা নয় চাঙ্গার দেশ কুড়িগ্রাম; সৈয়দ শামসুল হক

AZ Arif


পোস্টটি লিখেছেন- AZ Arif

“এদ্দিন তো ছিডোত থাকি হিস্যাবোত আছন্যুংন্যা, এ্যলা তাও গনতিত আসনু ফির শ্যাখের বেটিও আমাক গুলাক দেইখব্যার আসিল, ইয়্যার চাইতে আর কি পাবার আছে আমারগুল্যার বাহে….”; অধুনা বিলুপ্ত মুজিব-ইন্দিরা দাশিয়ারছড়া ইউনিয়নের জনৈক ব্যক্তি;
..এই বলে আমার বক্তব্য শেষ করছি বাংলাদেশ জিন্দাবাদ….থুক্কু,থুক্কু….ও ঐটা বলি নাই? এইটা দিয়ে জাতি স্বাধীনতা পেয়েছিল, জাতীয় শ্লোগান হইল জয় বাংলা, অবশ্যই বলবো জয়য়য়য়য়য় বঙ্গবন্ধ…!!! ;তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিরোধী দলীয় চিফহুইপ, কুড়িগ্রামের সাংসদ।
[০২]
রক্তপাত-অস্ত্র-যুদ্ধ ছাড়াই মুজিব ইন্দিরা চুক্তির বাস্তবায়নে পাওয়া ছিটমহল নামক ভূখন্ডের মানুষগুলোকে দেখতে এসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ঐতিহাসিক সফরে যে আলো ছড়িয়ে গেলেন তা কুড়িগ্রামবাসীর কাছে সোনায় সোহাগা। তিনি উন্নয়নের যে শুভ সূচনা করেছেন বা করবেন এ অঞ্চলের মানুষের জন্য, তাঁর অতি-আন্তরিক কথাগুলো একেবারে সভামঞ্চের নাকের ডগায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনলাম। ১৬টি উন্নয়ন কর্মের উদ্বোধন করলেন আর বাকীটা আগামী নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে রেখে গেলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি গুলোর চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো:
প্রতিশ্রুতি নং ১। সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,
প্রতিশ্রুতি নং ২। প্রত্যেক উপজেলায় ১টি করে হাই স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৩। জেলার ১৭টি নদীর নাব্যতার ফিরে আনতে ড্রেজিং চালুকরণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৪। জেলায় শিল্প কারখানার জন্য বিশেষ অর্থনৈতি অঞ্চল প্রতিষ্ঠাকরণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৫। দুধকুমর নদীতে ব্রিজ নির্মাণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৬। ধরলা ব্রিজের পাশে শিশু পার্ক স্থাপন,
প্রতিশ্রুতি নং ৭। প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম স্থাপণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৮। কুড়িগ্রাম-তিস্তা রেল যোগাযোগ সংস্করণ,
প্রতিশ্রুতি নং ৯। কুড়িগ্রাম-তিস্তা সড়ক নির্মাণ ইত্যাদি
“বাস্তবায়ন হবে তো!… ? বাস্তবায়ন চাই”…… জনৈক আশাবাদী;
[০৩]
“আমার কাছে দাবী দাওয়া পেশ করার প্রয়োজন নেই, একটা দেশের কিভাবে উন্নয়ণ করতে হয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তা ভাল করে জানে”………প্রধানমন্ত্রী
(১৫-১০-২০১৫খ্রি:, মুজিব-ইন্দিরা দাশিয়ারছড়া ইউনিয়ন পরিদর্শণ শেষে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠের সভাস্থলের অভিজ্ঞতা থেকে)

করতে কুড়িগ্রামের উন্নয়ন, রুখতে হবে নদী ভাঙ্গন | আনু ইসলাম

আনু ইসলাম


বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘খানা আয় ব্যয় জরিপ’-২০১৪ এবং ২০১৬ সালে দারিদ্র্যে শীর্ষ জেলাঃ কুড়িগ্রাম। বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত ২২৪৫.০৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তন এবং ছোট বড় মিলে মোট ১৬টি নদনদী নিয়ে গড়ে উঠেছে এই জেলাটি। যার মোট নদী পথের দৈর্ঘ্য ১৪৭.২০ কিলোমিটার। উক্ত জেলায় প্রবাহমান মূল ধারার নদনদীগুলো- ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ধরলা, দুধকুমার এবং তিস্তা। নদী অববাহিকায় গড়ে উঠা এই জেলাটির ৯টি উপজেলার, ৩টি পৌরসভা ও ৭৩টি ইউনিয়নে ২০.৬৯ লাখের অধিক মানুষের বসবাস। মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৪লাখ মানুষ ৬০-৬৫টি ইউনিয়নের ৪৫০টি চরে মানবেতর জীবন যাপন করে। কুড়িগ্রাম জেলায় শিক্ষার গড় হার ৫৬.৪৫ শতাংশ, যা বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বড় লজ্জার বিষয়। কুড়িগ্রামের বৃহৎ জনগোষ্ঠি কৃষির উপর নির্ভরশীল। এই জনগোষ্ঠির আয়ের ৭০.৪১ শতাংশই আসে কৃষি থেকে। বর্তমান জেলাটির মোট আবাদী জমির পরিমাণ ১,৬৭,৪৬৭ হেক্টর। যা বর্না ও নদী ভাঙ্গনের ফলে দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। যার ফলে বৃহত্তর এই জনগোষ্ঠি ধাবিত হচ্ছে চরম এক সংকটের দিকে।

নদী ভাঙ্গন বাংলাদেশের একটি স্থায়ী ও পুনঃসংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নদী যত পরিণত পর্যায়ে এগোতে থাকে (যেমন তিন প্রমত্ত নদী- ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা ও মেঘনার ক্ষেত্রে ঘটেছে) ততই সেগুলি মন্থর ও বিসর্পিল (আঁকাবাঁকা) আকৃতির হতে থাকে, নদীর এই দোলন নদীতীরের ব্যাপক ভাঙ্গন সংঘটিত করে। যার বাস্তব দৃশ্য- কুড়িগ্রাম জেলার উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণে প্রবাহমান ব্রহ্মপুত্র, ব্রহ্মপত্রের শেষ প্রান্ত থেকে বিস্তর দক্ষিণে প্রবাহমান যমুনা, খাড়া উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহমান ফুলকুমার এবং উত্তর-পশ্চিম হতে পূর্ব-দক্ষিণে প্রবামান ধরলা ও তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ফুটে উঠে। প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনের কারণে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষেতের ফসল, ফসলি জমি ও বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। অনাদীকাল থেকে জেলাটির ৯টি উপজেলায় নদী ভাঙ্গন ও বন্যার দূর্ভোগ যেন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৭টি উপজেলা সর্বাধিত ক্ষতিগ্রস্ত। নদী ভাঙ্গনের আর্থ-সামাজিক প্রভাব মারাত্মক। উলে­খ্য যে, অধিকাংশ নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন একে প্রাকৃতিক ঘটনা হিসাবে ধরে নেয়। অনেকে আবার দোয়া-মানৎ ইত্যাদির শরনাপন্ন হয়। আজ কুড়িগ্রামের জাতীয় দারিদ্র্যের বড় কারণ এই নদী ভাঙ্গন।

সা¤প্রতিক বছরগুলিতে নদী ভাঙ্গনের কারণে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং বিপদাপন্ন লোকের সংখ্যা আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিঃস্ব, রিক্ত ও সর্বশান্ত মানুষ ভূমিহীনের কাতারে সামিল হয়ে নতুন আশ্রয়ের খোঁজে দেশ-দেশান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জেলাটিতে প্রতি বছর প্রায় ৪০হাজার মানুষ প্রত্যক্ষভাবে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। প্রায় ৯হাজার গৃহহীন পরিবার উন্মুক্ত আকাশের নীচে, পথের পাশে, বাঁধে, ফুটপাত ও সরকারের খাস জমিতে এসে আশ্রয় নেয়। নদীতীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙ্গনের ফলে গ্রামীন কৃষিকাজ দারুনভাবে ব্যাহত হয়। বসত ভিটার  সঙ্গে কৃষিজমি, অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়। ফলে বিপন্ন জনগোষ্ঠির কৃষি আয় দারুনভাবে কমে আসে। বড় বড় কৃষকরা এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর মাঝারি কৃষক ও প্রান্তিক চাষির দল। ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা সম্পদ হারিয়ে জমানো সঞ্চয়ের উপর হাত বাড়ায় এবং প্রায়শই নতুন ঋণে জড়িয়ে পরে। সুযোগে এনজিও এবং চরা সুদের প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের বোঝা তুলে দেয় অসহায় এই জনগোষ্ঠির উপর। গবেষকদের মতে ভাঙ্গনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ভূমির পরিমাণ নদীর তলদেশ  থেকে জেগে উঠা নতুন ভূমির পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি। এ নদী পয়স্তি ও নদী সিকস্তি ঘটনা জেলাটির নদী গতি পথ ব্যবস্থার একটা বৈশিষ্টপূর্ণ বৈচিত্র, যা স্থানীয় রাজনীতির জন্ম দেয়। সঙ্গত কারণেই ‘কুড়িগ্রাম জেলা’ আজ বাংলাদেশে শীর্ষ দারিদ্র্যের অংশীদারি। তাই বাংলাদেশ সরকার এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন এই যে, নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল চিহ্নিত করে সেখানে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষিজমি রক্ষাপূর্বক এই উপেক্ষিত জনগোষ্ঠির দারিদ্র্য বিমোচন করতঃ জনগোষ্ঠির উন্নয়নের রাস্তা সুগম করে দিতে একান্ত মর্জি হয়।

প্রচারেঃ ঢাকাস্থ কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদ।