যেখানে ভুল করে ৯৯শতাংশ মানুষ!


আমরা জানি, সরলীকরণের বাইবেল খ্যাত টেকনিক হচ্ছে- BODMAS.

[যেখানে, B তে ব্রাকেট, O তে এর, D তে ভাগ, M তে গুণ, A তে যোগ এবং S তে বিয়োগ]
বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, 'এর' এবং 'গুণ' আপারেটর দুইটির ক্ষেত্রে দুই বা ততধিক সংখ্যাকে গুণ করতে হয়। কিন্তু এদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর তফাৎ। কেননা, 'এর' অপারেটরের কাজ করতে হয় ভাগের আগে কিন্তু গুণ অপারের কাজ করতে হয় ভাগের পরে। অর্থাৎ, আমরা এই সিদ্ধানে উপনীত হতে পারি যে, সরলীকরণের ক্ষেত্রে-
(২ এর ৩) এবং (২×৩) একই জিনিস নয়।

এখন ম্যাথটি সমাধান করা যাক-
১২÷২(৬-৭+৪)×২
=১২÷২(১০-৭)×২
=১২÷২(৩)×২
=১২÷৬×২
=২×২
=৪

সমস্যা এবং সমাধাণঃ
উপর্যুক্ত সমাধানে ৩য় লাইনটি[১২÷২(৩)×২] এই ম্যাথটির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল। যত ভুল বুঝাবুঝি সব এই লাইনটির কারণেই। এই লাইনে আপনি কোন কাজটি আগে করবেন তা হচ্ছে মূল কথা। এখানে ১২÷২ আগে নাকি ২(৩) আগে নাকি (৩)×২ আগে নাকি ২(৩)×২ আগে? এই প্রশ্নের সমাধান পেতে হলে জানতে হবে ২(৩) এর গোপন রহস্য। এখানে ২(৩) মূলত গানিতিক অপারেটর 'এর' কে নির্দেশ করে। অর্থাৎ- ২(৩) হচ্ছে মূলত '২ এর ৩'। তাহলে লাইটির মধ্যে পর্যায়ক্রমে আগে ÷ চিহ্ন, তারপর 'এর' চিহ্ন, তারোপর হচ্ছে × চিহ্ন। তাহলে BODMAS অনুসারে আগে 'এর' অর্থাৎ ২(৩) এর কাজ করতে হবে।

এখন ৪র্থ লাইন[১২÷৬×২] এ রয়েছে ÷ এবং × চিহ্ন। আপনি কোন কাজটি আগে করবেন? অবশ্যই '১২÷৬' এর কাজ। কারণ ভাগের পরে গুণের কাজ করতে হয়।

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে, ২(৩) কিভাবে 'এর' অপারেটরকে নির্দেশ করে? তাহলে চলুন...
প্রথমে আমরা সাধারণ ক্যালকুরেটরের কথায় আসি। এই ক্যালকুলেটরগুলো এমন ভাবে প্রোগ্রামিং করা যাতে গাণিতিক অপারেশনের মৌলিক সামান্য কিছু অপারেশণ করা সম্ভব। যেমন সরলীকরণের ক্ষেত্রে যে ৬টি গাণিতিক অপারেটর(ব্রাকেট, এর, ভাগ, গুণ, যোগ, বিয়োগ) কাজ করতে হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বন্ধনী এবং 'এর' এর কাজ সাধারণ ক্যালকুলেটর করতে পারে না। এটি এই ক্যালকুলেটরের সীমাবদ্ধতা। আপনি এ সকল ক্যালকুলেটরে যখনি ১২÷২(৬-৭+৪)×২ তুলতে যাবেন দেখবেন ১২÷২×(৬-৭+৪)×২ লেখা হয়ে গেছে। আর এখানেই ঘটলো বড় ভুল(অর্থাৎ ভাগের পর ২ এর ঠিক পরে শুধু প্রথম বন্ধনী না ওঠে ×( উঠেছে। এভাবেই ভুলভাবে সমাধান আসে ৩৬। [স্ক্রিন শর্ট ১ দেখেন]

এখন আপনি যদি ঐ অতিরিক্ত গুণ চিহ্নটি তুলে ans পেতে ক্যালকুলেটর চাপেন তবে ক্যালকুলেটর বলবে 'wrong format' অথবা, ক্যালকুলেটর কোন কাজ-ই করবে না। [স্ক্রিন শর্ট ২ দেখেন]

তাহলে কী ম্যাথটি আমরা ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে করতে পারবো না???
পারবো, অবশ্যই পারবো। এর জন্য প্রয়োজন একটি সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর।

স্ক্রিন শর্ট ৩ এ দেখুন আমি নিজ ইচ্ছায় ম্যাথটিতে একটি অতিরিক্ত × চিহ্ন ব্যবহার করেছি। অবশ্য এর একটি বিশেষ কারণ আছে। তা পরে বলছি। দেখুন এক্ষেত্রে উত্তর দেখাচ্ছে ৩৬।

এখন স্ক্রিন শর্ট ৪ লক্ষ করুণ-

এখানে ম্যাথটি ঠিকঠাক উঠানো হয়েছে। চাইলে আপনিও প্রাকটিস করতে পারেন। এখন উত্তর দেখেন ৪(চার)। তো কথা হচ্ছে যে, যদি আমরা ২(৩)×২ এর ক্ষেত্রে ২(৩) কে ২×৩ হিসাবে বিবেচনা করি তবে স্ক্রিন শর্ট ৩ এবং ৪ এ একই উত্তর দেখার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। তাহলে বুঝতে হবে যে ২(৩) অংশটি গুণ কে বুঝাচ্ছে না। আর যদি গুণ না বুঝায় তবে ২(৩) কী???
আসলে ২(৩) অংশটিকে প্রথমত আপনি ভাবতে পারেন যে, ২ এর ৩ হিসাবে, অন্যথায় ভাবতে পারেন যেহেতু (৩) এ এখনো প্রথম বন্ধনী আছে তাই অন্য কোন গাণিতিক অপারেটরের আগেই ২(৩) অংশটির কাজ করে বন্ধনী বিলুপ্ত করতে হবে।

তাহলে, ম্যাথটির সঠিক উত্তর ৪ যা সায়েন্টিফিক্যারি প্রামিণত হলো।

আমি ছোট মানুষ। আমার সমাধানে যদি কোন ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে তা জানালে আমি উপকৃত হব।

আপনাদের শুভকামনায় আমি- আনু ইসলাম

0 Comments:

Post a Comment