কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
চিলমারী টু ঢাকা রুটে ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস চালু, রৌমারী পর্যন্ত রেললাইন ও গ্যাসলাইন সম্প্রসারণ, ৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিশ্ববিদ্যালয় চালু ও নির্বাচনী আইন সংস্কারসহ 'কুড়িগ্রামের জন্য কুড়িটি দাবি' সংসদ প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভূক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে তারা বলেন, গণকমিটি জন্মের পর থেকে দৃঢ়ভাবে একটানা লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে চিলমারীতে পেদীখাওয়া বাঁধের ক্ষতিপূরণ আদায়, চিলমারীকে রক্ষায় ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ণ, রমনা লোকাল দুইবার চলাচল, বাঁধের বাসিন্দাদের সম্মতিবিহীন ও পুনর্বাসনহীন উচ্ছেদ প্রতিরোধ ও চিলমারী নদীবন্দর চালুর দাবি প্রতিষ্ঠা; উলিপুরে বুড়িতিস্তা আন্দোলন, সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের গঙ্গাধর নদী অবৈধ বালু উত্তোলন ঠেকানোসহ জেলা সদরে একটি শাটল ট্রেন আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও নদনদীর ড্রেজিং এর প্রতিশ্রুতি আমরা পেয়েছি।
আন্দোলনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, রেলমন্ত্রীর সাক্ষাৎ আমরা পেয়েছি কিন্তু নিজ এলাকার সাংসদরা দরখাস্তে সুপারিশ তো দূর কি বাৎ, সাক্ষাৎ পর্যন্ত করেননি। সাক্ষাৎ এর জন্য তাজুল চৌধুরীর পিএস ঘুষ পর্যন্ত নিয়েছে। তাই ভোটের আগে সাফ কথা জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের দাবিগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভূক্ত করা না হলে ব্যালটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব আমরা দিব।
আমাদের দাবিসমূহ :
১. চিলমারী টু ঢাকা রুটে ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস চালু।
২. ভূরুঙ্গামারী-নাগেশ্বরী, রৌমারী-রাজীবপুর ও কুড়িগ্রামের বাকি অংশে ১ টি করে মোট ৩ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন।
৩. চিলমারী টু রৌমারী/রাজীবপুর নৌ রুটে ফেরী সার্ভিস চালু।
৪. সোনাহাট টু কুড়িগ্রাম ও রৌমারী টু জামালপুর রেল লাইন চালু ও চিলমারী নদীবন্দর বাস্তবায়ন।
৫. রৌমারীকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করা, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর স্থাপন ও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা।
৬. ব্রহ্মপুত্রসহ সকল নদনদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে কৃষি জমিসহ প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করা।
৭. ব্রহ্মপুত্রের খনিজ সম্পদ ব্যবহারপূর্বক কাঁচ শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প স্থাপন এবং বাকি বালু দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের দুই পাশে শহর গড়ে তুলে চরবাসিকে আধুনিক জীবনের সাথে যুক্ত করা।
৮. ব্রহ্মপুত্রে চরে হারিয়ে যাওয়া বন পুনরুদ্ধার করে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য সৃষ্টি ও মাছ-পাখি-কাছিম-শুশুকের বাস্তুসংস্থান নিশ্চিত করা।
৯. ৩শ মেঃওয়াট সম্পন্ন কয়েকটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা।
১০. আগামি ৫ বছরে রাষ্ট্রীয় খরচে ৫লক্ষ শ্রমিককে বিদেশে প্রেরণ করতে হবে।
১১. লালমনিরহাটে বিমানবন্দর ও আধুনিক রেলকারখানা স্থাপন করতে হবে।
১২. নাগেশ্বরীর রায়গঞ্জ হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণত করতে হবে।
১৩. কুড়িগ্রাম জেলাকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা ও ব্রহ্মপুত্রের তীর ধরে উলিপুর-চিলমারী ব্যাপী মেরিন ড্রাইভ সড়ক স্থাপন করা।
১৪. চরগবেষণাকেন্দ্র স্থাপন করা।
১৫. হাটগুলোতে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন ও হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
১৬. চিলমারী-হরিপুর সেতুর নকশাঁয় রেলপথ যুক্ত করা।
১৭.দেশের প্রতিটি উপজেলায় সরকারি গ্রন্থাগার স্থাপন ও অডিটরিয়ামগুলোকে সংস্কার করা এবং প্রতিটি জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর স্থাপন।
১৮. অবৈধ ফকরুদ্দীন সরকারের দল নিবন্ধন আইন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আইন বাতিলের দাবি তোলা।
১৯. এক স্তরের সরকারের বদলে দুই স্তরের সরকারের দাবি তোলা। যেন কেন্দ্রীয় সরকার ও সাংসদগণ শুধু আইন প্রবর্তন করবেন আর স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা উন্নয়ন কাণ্ড পরিচালনা করবেন। এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণকে যেকোন সময় প্রত্যাহার করা যায়।
২০. ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার পূর্বক জনগণের হাতে ফেরান, প্রধানমন্ত্রী নামক পদের বদলে সবার হাতে ক্ষমতার বন্টন এর দাবি সংসদে তুলতে হবে।
জেলা কমিটির সভাপতি সালেহা ইয়াসমিন লাইলীর সভাপতিত্বে দাবিনামা পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট প্রদীপ কুমার রায়। এছাড়াও জেলা ও উপজেলার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।